সেলিম সানোয়ার পলাশ, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় রাজশাহীর তানোর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রাম সুরক্ষা অভিযান শুরু হয়। অভিযানের প্রথম দিন অর্থাৎ গত ১৩ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আনসার সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এঘটনায় তানোর পৌর এলাকার আমশো গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক মণ্ডলকে (৪২) ঘটনাস্থলেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেক সংক্রমণ প্রতিরোধ আইনে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। ফলে থানা পুলিশ মালেককে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তানোরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ইউএনও’র নির্দেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেকসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা সোমবার সন্ধ্যায় তানোর পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। সেখানে দেড় থেকে পৌনে দুইশ লোকের সমাগম ঘটে। এসময় গ্রামের ভিতরে গুজব ছড়ায়, কারোনায় সনাক্তদের স্কুল ঘরে চিকিৎসা দেয়া হবে। এতে গ্রামে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে মানুষের প্রাণ যাবে। হামলায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি চালক সুজন (৩৫), আনসার সদস্য আল-আমিন (২৮) ও রাজিব (৩০) আহত হন। তবে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেকের ডান হাতে গুরুত্বর আঘাতের ফলে তাঁকে স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁর ডান হাত ব্যান্ডেজ করতে দেখা গেছে।
কিন্তু আহতের বিষয়টি অস্বীকার করে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা কেউ ঢাকা, আবার কেউ গাজিপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ছিলেন। বেশ কয়েকদিন আগে শতাধিক ব্যক্তি এসব এলাকা থেকে তাদের নিজ গ্রামে আসে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসলে উপজেলার তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য নির্বাচিত করা হয়। তিনি আরও জানান, একারণে সোমবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেক তানোর পৌর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। এসময় সেখানে দেড় থেকে দুইশ লোকের সমাগম ঘটে।
এনিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেক বলেন, করোনার প্রার্দুভাব প্রতিরোধে গ্রাম সুরক্ষার উদ্যোগে ইউএনও স্যারের নির্দেশে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য স্কুল পরিদর্শনে যাওয়া হয়। এসময় সেখানে দেখা যায় একত্রে অনেক লোকের সমাগম। এতো লোকের অবস্থান দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘরের বাইরে বের না হতে অনুরোধ জানায়। এসময় স্থানীয়া আনসার সদস্যদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে সেখানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ব্যবহার করা যাবে না বলে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসময় আবদুল মালেক মণ্ডলকে আটক করে ঘটনাস্থলেই ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয় বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।